ABO ব্লাড গ্রুপ কী
ABO ব্লাড গ্রুপ
লোহিত রক্তকণিকার প্লাজমা মেমব্রেনে অবস্থিত বিভিন্ন এন্টিজেনের উপস্থিতির ভিত্তিতে রক্তের শ্রেণিবিন্যাসকে ব্লাড গ্রুপ বলে। অস্ট্রিয়ায় জন্ম গ্রহ্ণকারী আমেরিকান জীববিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার ( Karl Landsteiner) ১৯০১ সালে মনুষ্য রক্তের শ্রেণিবিন্যাস করেন। রক্তকণিকায় কাকগুলো অ্যান্টিজেন ( antigen) - এর উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির উপর নির্ভর করে বিজ্ঞানী ল্যান্ডস্টেইনার মানুষের রক্তের যে শ্রেণিবিন্যাস করেন, তা ABO ব্লাড গ্রুপ বা সংক্ষেপে ব্লাড গ্রুপ (blood group) নামে পরিচিত। বিজ্ঞানীদের প্রচন্ড আগ্রহের ফলে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত আরও ১৩ টি ব্লাড গ্রুপ আবিস্কৃত হয়।
মানুষের রক্তে A ও B --এই দুইরকম এন্টিজেন থাকতে পারে। এন্টিজেন A ও B - র সাথে রক্তরসে কাকগুলো স্বতঃস্ফূর্ত এন্টিবডি রয়েছে। এগুলোকে বলে a বা ( anti - A) এবং b বা (anti- B)। এভাবে এন্টিজেন ও এন্টিবডির উপস্থিতির ভিত্তিতে সমগ্র মানবজাতির রক্তকে চারটি গ্রুপে ভাগ করা যায়, যথা- A,B,AB ও O।
A ব্লাড গ্রুপে A এন্টিজেন, B ব্লাড গ্রুপে B এন্টিজেন এবং AB ব্লাড গ্রুপে A ও B উভয়ই এন্টিজেন থাকে। O ব্লাড গ্রুপের রক্তের কণিকাঝিল্লিতে কোনো এন্টিজেন নেই কিন্তু রক্তরসে a ও b দুইরকম এন্টিবডিই থাকে।
A-আ-গ্রুপের রক্তের এন্টিবডি B ব্লাড গ্রুপের লোহিত কণিকা কে জমিয়ে দেয়। অঅনুরূপভাবে, B গ্রুপের রক্তের এন্টিবডি A গ্রুপের রক্তের লোহিত কণিকা কে জমিয়ে দেয়। কিন্তু AB গ্রুপের রক্ত অন্য গ্রুপের রক্তকে জমাতে পারে না, কারণ সেখানে কোনো এন্টিবডি নেই। একই কারণে O গ্রুপের রক্ত নিজের গ্রুপের রক্ত ছাড়া অন্য ৩ টি গ্রুপের রক্তকে জমিয়ে দেয়। অর্থাৎ কারও দেহে O গ্রুপের রক্ত থাকলে তিনি কেবল O গ্রুপের রক্ত নিতে পারবেন কিন্তু দেওয়ার সময় সব গ্রুপকেই রক্ত দিতে পারবেন।
ABO ব্লাড গ্রুপের বৈশিষ্ট্য
ব্লাড গ্রুপের নাম | অ্যান্টিজেন | অ্যান্টিবডি | যাদেরকে রক্ত দান করতে পারবে | যাদের রক্ত গ্রহণ করতে পারবে |
গ্রুপ A (২৩%) | A | b | A ও AB | A ও O |
গ্রুপ B (৩৫%) | B | a | B ও AB | B ও O |
গ্রুপ AB (৮%) | A ও B | a বা b কোনোটিই নেই | AB | A,B,AB ও O |
গ্রুপ O ( ৩৪%) | কোনো অ্যান্টিজেন নেই | a ও b উভয়ই আছে | A,B,AB ও O | O |
সূত্রঃ জীববিজ্ঞান বই (একাদশ - দ্বাদশ শ্রেণি)